রাত জাগলে শরীরে কি কি পরিবর্তন ঘটে

রাত জাগলে শরীরে কি কি পরিবর্তন ঘটে। বর্তমান সময়ে আমরা সকলেই টুকটাক রাত জাগি।কারনে অকারনে, মাঝে মাঝে কেবল রিলস স্ক্রল করতেও আমরা রাত জাগি। অনেকের ক্ষেত্রে সেটি রোজকার একটি অভ্যাস। তবে প্রতিনিয়ত রাত জাগা কিন্তু আমাদের শরীরে অনেক রকম পরিবর্তন আনতে পারে। যা আমাদের শারীরিক এবং মানসিক অবস্থার দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারন।রাত জাগা এক ধরনের বদভ্যাস। আপনি যদি স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ হন এবং জানতে আগ্রহী হন যে রাত জাগলে আমাদের শরীরের কি কি পরিবর্তন আসে।
রাত-জাগলে-শরীরে-কি-কি-পরিবর্তন-ঘটে
আমাদের শরীর কি কি ক্ষতির সম্মুক্ষিন হয় এবং ভবিষ্যতে কি কি সমস্যা হতে পারে তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।প্রতিনিয়ত রাত জাগা আমাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
আমেরিকার ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন রাত জাগার ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরেছেন।চলুন জেনে আসা যাক রাত জাগলে আমাদের দেহের কি কি পরিবর্তন আসতে পারে।

পোষ্ট সূচিপত্রঃরাত জাগলে শরীরে কি কি পরিবর্তন ঘটে

রাত জাগলে শরীরে কি কি পরিবর্তন ঘটে

আমরা অনেকেই ভোরে উঠার থেকে রাত জাগাতেই সাচ্ছন্দ্য বোধ করি। তাই প্রায়শই রাতও জাগি।একটা সময় দেখা যায় রাত জাগা আমাদের অভ্যাসে বা বদ অভ্যাসে পরিনত হয়েছে।তখন আমাদের কিছু শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তন আমাদের চোখে পরে।কিন্তু আমরা অনেকেই এই সম্পর্কে অবগত নই যে এ সকল সমস্যা আমাদের রাত জাগার কারনে হচ্ছে।আমরা বিষয়টি এড়িয়ে যায়।তবে এসকল সমস্যা একসময় কারন হতে পারে বড় সমস্যার কারন।অপর্যাপ্ত ঘুম আমাদের দেহের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারন হতে পারে খুব সহজেই।

রাত ১২টা থেকে ৩টার মধ্যো না ঘুমালে বা ঘুম থেকে জেগে উঠলে সেরোটোনিন কমে হরমোন কমে যায়।রাতে এ হরমোন নিঃসরণ বেশি থাকে।এটি আমাদের মনকে শান্ত করে এবং ঘুমাতে সাহায্য করে।এটা এছাড়া এই হরমোন দ্রুত চোখের চলাচল (আরইএম) প্রভাবিত করে।যা ইলেক্ট্রোফিজিওলজিক্যাল, নিউরোলজিক্যাল, জেনেটিক ও নিউরো ফার্মাকোলজিক্যান ভিত্তিতে ঘুমের ক্ষেত্রে একটি প্রধান ভুমিকা রাখে। পাশাপাশি ডোপামিন হরমোনের ঘাটতি হয়।চলুন জেনে আসা যাক ঘুমের ঘাটতি হলে আমাদের শরীরের কি কি পরিবর্তন আসে।

রাত জাগলে কি উচ্চ রক্তচাপ বাড়ে

হ্যা, রাত জাগলে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বাড়ার ঝুকি বাড়ে।অপর্যাপ্ত ঘুম উচ্চ রক্ত চাপ বা হাইপারটেনশনের কারন হিসাবে বিবেচনা করা হয়।অনিয়মিত ঘুমের কারনে স্বাধাবিক ছন্দ বা সার্কিডিয়ান বিদম ব্যাহত হয়,যা উচ্চ রক্তচাপের  একটি অন্যতম কারন। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের কার্টিসোল এবং অ্যার্ড্রেনালির মতো স্ট্রেস  হরমোন মাত্রা বেড়ে যায়, যা রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। যা আমাদের সার্কুলার সিস্টেমের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলে।  রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে পর্যাপ্ত ঘুমের একটি বড় ভুমিকা রয়েছে।
গবেষনাই দেখা গেছে, নিয়মিত ঘুমের অভাব ধীরে ধীরে হার্টের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেই এবং রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এর ফলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতল মারাত্মক রোগের ঝুকিও বাড়ে।এছাড়া রাত জাগার কারনে অনেকেই অস্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং শারিরিক পরিশ্রম কম হয়। এতে ওজন বাড়ার ঝুকি বাড়ে, যা উচ্চ রক্তচাপেের একটি বড় কারন।রাত জাগার ফলে মানসিক চাপ,উদ্বেগ ও অবসাদ বৃদ্ধি পায়, যা রক্তচাপ বাড়ানোর জন্য দায়ী।তাই একজন মানুষের প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এটি আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখবে।

রাত জাগলে ডায়াবেটিসের সম্ভবনা বাড়ে

হ্যা রাত জাগলে বা অপর্যাপ্ত ঘুম ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াই।গবেষনাই দেখা গেছে, যারা রাতের পর রাত জেগে থাকেন, তাদের ডায়াবেটিস টাইপ ২ এর ঝুঁকি অনেক অংশে বেড়ে যায়।ঘুম কম হলে খুদা নিয়ন্ত্রন হরমোন গুলো যেমন ঘ্রেলিন এবং লেপটিন ইত্যাদির ভারসাম্য নষ্ট হয় এর ফলে বেশি খাওয়ার প্রবনতা বাড়ে।রাত জাগার কারনে বেশি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়,যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে, ওজন বৃদ্ধি ডায়াবেটিসের একটি বড় ঝুঁকি। রাতে জেগে থাকলে অনেকেই ভাজা পোড়া, ফাস্ট ফুড বা মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খান, যা রক্ত  শর্করার পরিমান বাড়িয়ে দেই। যা ডায়াবেটিসের বড় কারন। ডায়বেটিস শরীরের জন্য একটি ক্ষতিকর ব্যাধি।যা একজনকে মৃত্যু পর্যন্ত ঠেলে দিতে পারে।

রাতে ৭ থেকে ৮  ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এটি আপনার হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখবে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।মেডিসিন চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মতে, রাত জাগার অনুপান হিসাবে এটা সেটা খেলে, ওজন বাড়তে শুরু করে। ক্রনিক অসুখ বিসুখ থাকলে বা বয়স বেশি হলো রোগের প্রকোপ বাড়প বা অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।তা ছাড়া রক্তে শর্করার পরিমান বাড়তে পারে।যা ডায়াবেটিসের সমস্যার সৃষ্টি করে।তাই পর্যাপ্ত ঘুম একান্ত জরুরী।

রাত জাগলে মাইগ্রেন মাথাব্যাথ্যা বাড়ে

রাত জাগলে বা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে মাইগ্রেনের ব্যাথা বেড়ে যেতে পারে। ভালো ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলা মাইগ্রেন প্রতিবেধের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন উপায়।আপনার যদি মাইগ্রেন থেকে থাকে আপনি নিজের ঘুমের দিকে বারতি নজর দিন।ঘুমের সময় মস্তিষ্কে কিছু হরমোনের মাত্রা ওঠানামা করে। ঘুমের অনিয়ত হলে এই হরমোন গুলোর ভারসাম্য নষ্ট হয় যা মাইগ্রেনের কারন হতে পারে।আবার ঘুমের অভাব বা অনিয়মিত ঘুমের কারনে মানসিক চাপ বা বিষন্নতা বাড়তে পারে, এই মানসিক চাপ মাইগ্রেনের কারন হতে পারে। রাতে দীর্ঘসময় খালি পেটে থাকার কারনে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে।এটিও মাইগ্রেনের সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে।রাতে দীর্ঘক্ষন মোবাইল, টিভি বা কম্পিউটার ব্যাবহারের কারনে স্কিন থেকে আসা নীল আলো মাইগ্রেনের সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে।

 আপনার মাইগ্রেন থাকলে আপনাকে অবশ্যই উক্ত বিষয়গুলোর প্রতি সচেতন থাকতে হবে।প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো খুবই প্রয়োজনীয়। মাইগ্রেন শুরু হলে একটি অন্ধকার এবং শান্ত ঘরে শুয়ে বিশ্রাম নিন।শরীরকে আদ্র রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করা প্রয়োজন। ডিহাইড্রেশান বা পানিশুন্যতা মাইগ্রেনের একটি কারন।বেশি করে পানি পান করুন।শরীরকে হাইগ্রেট রাখুন।পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া ঘুমেরও সমস্যা সৃষ্টি করে।এটি আপনার ঘুমের সমস্যাও দুর করবে।তাই মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে বাঁচতে রাত জাগা থেকে বিরত থাকুন এবং ঘুমানোর একটি সঠিক নিয়ম তৈরি করুন।

রাত জাগলে কি মেটাবলিক ডিসওর্ডার হতে পারে?

হ্যা বেশি রাত জাগলে মেটাবলিক ডিসওর্ডার হতে পারে।মেটাবলিক ডিসওর্ডার হলো এমন এক ব্যাধি যা শরীরের প্রোটিন, চর্বি এবং কার্বোহাইড্রেটের মতো ম্যাক্রো নিউট্রিয়েন্টগুলের প্রক্রিয়াকরন এবং বিতরনকে নেতিবাচক ভাবে পরিবর্তন করে। এর ফলে অলসতা, ওজন কমে যাওয়া, জন্ডিস এবং খিচুনির মত সমস্যা দেখা দেই।মেটাবলিক ডিসওর্ডার দেহের অনেক অংশের ক্ষতি করে। শাক্তির ব্যায়ের পরিবর্তন ঘটে।
রাত-জাগলে-শরীরে-কি-কি-পরিবর্তন-ঘটে
রাত মুলত বিশ্রামে সময়। আমাদের ব্রেন রাতে তুলনা মুলক শক্রিকম খরচ করে শক্তি সন্ঞ্চয় করে। তবে যখনই আমরা রাত জাগি তখন আমাদের তুলনামুলক বেশি শক্তির খরচ হয়।যা শক্তি ব্যায় প্রক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটায়।এছাড়া আমাদের রেপিড আউ মুভমেন্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস লেভেলের চাপ বৃদ্ধি করে।যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপুর্ন।তাই আমাদের সকলের পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমানো উচিত এবং সঠিক সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস তৈরি করে উচিত । 

রাত জাগলে স্লিপিং ডিসঅর্ডার হতে পারে

হ্যা রাত জাগলল স্লিপ ডিসওর্ডার হতে পারে।আমাদের শরীরে একটি অভ্যান্তরিন ঘড়ি রয়েছে যাকে সার্ক্যাডিয়ান সাইকেল বলা হয়। এই রিদম ২৪ ঘন্টা উপর ভিত্তি করে আমাদের শরীরকে বলে দেই কখন ঘুমাতে হবে এবং কখন জেগে উঠতে হনে। এটি হরমলন, হজম এবং শরীরের তাপমাত্রার মতো শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়া প্রভাবিত করে হার্ভাড স্কুলের স্লিপ মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক  এরিক ঝাউ দাবি করেছেন দীর্ঘ দিন রাত জাগলে মানব শরীরের এই গুরুত্বপুর্ন সার্ক্যাডিয়ান সাইকেলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। 
এর ফলে হতে পারে অনিদ্রার মতো মারাত্মক সমস্যা।ঘুমানোর সময় অস্বস্তি,ঘুুম না আসার প্রবনতা বাড়ে।তাছাড়া রাতে ঘুমাতে না পারা ও দিনে ঘুমিয়ে যাওয়ার মত সমস্যাও দেখা দেই।এই রোগ কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর অবস্থায় চলে গেলে চিকিৎসার আবশ্যকতা হতে পারে। ঘুমের ব্যাধি বা স্লিপিং ডিসওর্ডারের ফলে শারীরিক ক্লান্তি, অবসাদ, বিরক্তি কোনও কাজে মনযোগ দিতে না পারার মতো সমস্যা হয়ে থাকে।এর প্রভাব ত্বক এবং চুলের উপরও পরতে দেখা যায় মাঝে মাঝে।তাই সঠিক সময়ে ঘুমানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার একবার স্লিপিং ডিসঅর্ডার তৈরি হলে বুঝবেন এটি কি ভয়ানক সমস্যা।আপনার জীবন ক্রিয়াই এর প্রভাব পরবে সর্বত্র। 

রাত জাগলে কি মেজাজ খিটখিটে হয়

হ্যা রাত জাগলে মেজাজ খিটখিটে হয়।কারন এটি শরীর ও অনেক উপর চাপ সৃষ্টি করে, হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে।রাত জালে বিরক্তি এবং অধৈর্য ভাব বৃদ্ধি করে দীর্ঘদিন থেকে রাত জাগলে শারিরীক এবং মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হয়, কাজে মন বসাতে সমস্যা সৃষ্টি করে। যা মন মেজাজ খিটখিটে করে তোলে।রাত জাগলে শরীরের স্ট্রেস হরমোন অর্থাৎ কার্টিসোল নিঃসরন বেড়ে যায়,মেজাজ নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন অর্থাৎ সিরোটোনিন, ডোপামিন নিঃসরণ কমে যায় । তাই মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় 

আবার রাত জাগলে শারীরিক এবং মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়, যা উদ্বেগ ও হতাশা সৃষ্টি করে, যা বহিপ্রকাশ হিসাবে রাগ বের হয়ে আসে। শরীর ক্লান্ত থাকলে  এবং মন সতেজ না থাকলে কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস পায়।তখন ছোটখাটো বিষয়ে বিরক্তি সৃষ্টি হয়। তাই মেজাজ অকারনে খিটখিটে হয়ে থাকলে বা মন সতেজ অনুভব না হলে অনেকেই ঘুমাতে বলে থাকেন।ঘুম শরীরের সতেজতা ফিরিয়ে আনে এবং মেজাজ ফুরফুরে করে।তাই রাত রাত জাগা থেকে বিরত থাকুন।সঠিক নিয়মে ঘুমাতে অভ্যাস তৈরি করুন।

রাত জাগলে কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ হতে পারে

হ্যা রাত জাগলে বা অপর্যাপ্ত ঘুমের কারনে কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ হতে পারে।কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ হলো হৃৎপিন্ড বা রক্তনালীর সাথে জড়িত যেকোন রোগ এটি রক্তসংবহন তন্তের রোগ নামেও বহুল পরিচিত। এই অবস্থায় হৃদপিন্ডের পেশীতে পযাপ্ত রক্ত, অক্সিজেন এবং পুষ্টি পাঠাতে বাধা প্রাপ্ত হয়। এতে করে বুকের ব্যাথা, শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি, চেতনা হ্রাস, হার্ট ফেইলার, হার্ট স্ট্রোক, অ্যানিউরিজম, পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ, হটাৎ কার্ডিয়াক অ্যারপস্ট হতে পারে।

ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউটের গবেষনাই দেখা গেছে যারা ৫ বছরের বেশি সময় ধরে রাত জেগে কাজ করেছেন তাদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুকি অনেক অংশে বেশি।পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব রক্তনালি প্রসারিত করে দেই। স্ট্রেস লেভেল বাড়াই। তাই রক্ত চাপও বেড়ে যায়।উচ্চ রক্তচাপ হৃৎপিন্ডের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।এছাড়া অপর্যাপ্ত বা অনিয়ত ঘুম শরীরের স্বাভাবিক ক্রিয়া প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। তাই একজন মানুষের ৭ থেকে ৮ ঘন্টার ঘুম সুনিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন একটি বিষয়। 

রাত জাগলে কি হরমোন ক্রিয়া ব্যাঘাত ঘটে

হ্যা রাগ জাগলে বা অপর্যাপ্ত ঘুম হরমোন ক্রিয়াই ব্যাঘাত ঘটায়।যেমন মেলাটোনিন আমাদের ঘুমের চক্র ঠিক রাখে।দিনের আলোতে মেলাটোনিন নিঃসরন হয়না  বললেই চলে।মেলাটোনিন রাতে নিঃসৃত হয়।যার ফলে আমরা ঘুমাতে পারি। মেলাটোনিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসাবেও কাজ করে। মেলাটেনিনের পরিমান বাড়লে কর্টিসোল কমে যায়।কার্টিসোল হরমোন আমাদের গ্লুকোজের পরিপাকে সহযোগিতা করে। ক্ষুধার অনুভুতি তেরি করে। সকালে ঘুম থেকে উঠতে সহয়তা করে।
রাত-জাগলে-শরীরে-কি-কি-পরিবর্তন-ঘটে
অ্যাড্রেনাল নামক গ্রন্থি থেকে কার্টিসোল  হরমোন নিঃসরণ হয়।একে স্ট্রেস হরমোনও বলা হয়।কারন এটি আমাদের স্ট্রেস লেভেল নিয়ন্ত্রন করে। মেজাজ ভালো রাখে।রাতে ঘুম কন হলে কার্টিসোল হরমোনের ভারসাম্য হীনতা হয়।এতে ডায়াবেটিস, হৃদরেগ এবং পরিপাক তন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদী রোগের জন্ম দেই।তাই হরমোন ক্রিয়া সচল এবং সুষ্টু সবল রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত জরুরি।রাত জাগলে হরমোন নিঃসরনে ব্যাঘাত ঘটে। যা আমাদের শরীরের জন্য রিতিমত ভয়ানক।

রাত জাগার উপর অ্যান্টিডাইইউরেটিক হরমোনের প্রভাব

অ্যান্টিডাইইউরেটিক হরমোনও রাতেই নিঃসৃত হয় । ফলে আমাদের রাতে প্রস্রাবের জন্য ঘুম ভেঙে উঠতে হয় না।এ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রীয়া আমাদের খুব ভালো ঘুম হতে সাহায্য কটে।রাতের ভালো ঘুম অন্যান্য হরমোনের ভারসাম্য রক্ষর করতে সাহায্য করে।এ হরমোন নিঃসরন আমাদের খাদ্যভ্যাসের ওপরও অনেকটা নির্ভরশীল।খাদ্যভ্যাস ভালো না হলে আমাদের শরীরের অ্যান্টিডাইইউরেটিক হরোম নিঃসরন কমে যায়।যা আমাদের ঘুমাতে ব্যাঘাত ঘটায়।
এ ছাড়া আরও অনেক হরমোন আছে, যেগুলা রাতের ঘুমের মধ্যো বেশি নিঃসৃত হয় যেমন প্রোল্যাক্টিন, অক্সিটোনিন ইত্যাদি।আরো একটি রয়েছ যাকে বলে ডোপামিন।এদের ভালোবাসার হরমোনও বলা হয় ফলে আমরা একে অপরের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকি।ভালোবাসা অনুভব করে থাকি।এছাড়া টেস্টেস্টেরন, রেজেস্টেরন হরমোনের যথাযত ছন্দ বজাই রাখতে রাতের ঘুমের গুরুত্ব অপরীসীম।তাই আমাদের রাতে সময় মত ঘুমানো উচিত সকলকে।

রাত জাগলে গ্যাস্ট্রাইনস্টাইনাল ডিসঅর্ডার এবং ক্যান্সার হতে পারে

গ্যাস্ট্রাইনটেস্টাইনাল ডিসঅর্ডাট হলো পাচনতন্ত্রের ব্যাধী।সার্ক্যাডিয়াল সাইকেল পচনতন্ত্রকেও প্রভাবিত করে।রাত জাগার ফলে এই সাইকেলের নেতিবাচক প্রভাব পাচনতন্ত্রের রোগের ঝুকও বাড়াতে পারে।পাচনতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।যা গ্যাস্ট্রাইনটেস্টাইনাল ডিসঅর্ডার বা বা পচনতন্ত্রের সমস্যা নামেই অধিক পরিচিত।এর সকল সমস্যার মাঝে রয়েছে পেটের সমস্যা, পেটের অস্বস্তি, কোষ্টকাঠিন্য এবং ডায়রিয়ার মতো সমস্যা।যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

রাত জাগার ফলে সার্কাডিয়ান সাইকেলের ভারসাম্যহীনতা মানবদেহের সেলুলার ফাংশনে রভাব ফেলে।এটি ডিএনএ ও কোষ চক্রতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং ডিএনএ এবং কোষ চক্রের ক্ষতি সাধন করে। ন্যাশনাল টক্সিকোলজি প্রেগ্রাম অনুসারপ সার্ক্যাডিয়ান সাইকেলে ব্যাঘাত ঘটলে শেষ পর্যন্ত ক্যান্সসারের মতো মরন ব্যাধি, বাড়াতে পারে মৃত্যু ঝুকিও।তাই আমাদের সকলকে আমাদের ঘুমানোর নিয়মের উপর বারতি নজর রাখা উচিত।সঠিক সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা উচিত।

রাত জাগলে শরীরে কি কি পরিবর্তন ঘটে / শেষ কথা 

প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে কমপক্ষে প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত৷। শিশুদের জন্য সময়টা আরও বেশি। ঘুম হতে হবে রাতের অন্ধকারে। আমাদের শরীরের একটি হরমোন কর্মকান্ড অন্য একটি কর্মকান্ডের সাথে সম্পর্কৃত।তাই যেকোন একটু ভারসাম্য নষ্ট হলে এর প্রভাবে অনান্য অংশের ভারসাম্যও নষ্ট হতে পারে। এর একটি ছন্দ না রিদম আছ এর ছন্দ বা রিদম নষ্ট হলে শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়।যা আমাদের শরীরের অনেক ক্ষতি করে।যা সাময়িক মনে হলে হতে পারে দীর্ঘমেয়াদী বড় সমস্যা।

আপনি যদি স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে থাকেন নিজেকে ভালোবেসে থাকেন,নিজের স্বাস্থ্যকে গুরুত্বপুর্ন ভেবে থাকেন এবং নিচের স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে চান তবে সবার প্রথমে নিজের ঘুমের সময় এবং পর্যাপ্ত পরিমান ঘুম নিশ্চিত করুন।ঘুম দেহের জন্য একটি অত্যাবশকীয় বিষয়। মনে রাখবেন আপনার স্বাস্থ্য আপনার নিজের দায়িত্ব।নিজের শরীরকে সুস্থ এবং সবল রাখতে দিনে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।তাড়াতাড়ি ঘুমানোর অভ্যাস তৈরি করুন এবং একটি শান্তির ঘুম নিশ্চিত করুন।
আর  আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আপনার বান্ধবীদের সাথে শেয়ার করুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি নিবোর্ন সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url