কাঁপুনি জ্বরের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা
কাঁপুনি জ্বরের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা।আমাদের শরীরে কাঁপুনি জ্বর কেন হয় এটি
হয় কারণ শরীরে কি স্বাভাবিক প্রতিরক্ষা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তখন আমাদের
নিজের শরীর রক্ষা করার জন্য তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির
প্রক্রিয়াটি পেশীয় সংগঠনের মাধ্যমে আমাদের শরীরে যে কাঁপুনি হিসেবে অনুভূত
হয়। সেই কাঁপনী শরীরকে তাপ উৎপন্ন করতে সাহায্য করে আরো ইত্যাদি যা আমরা
আর্টিকেলের মাঝে পড়তে পড়তে সবকিছুই পাব এবং এই আর্টিকেলে আরো থাকতেছে কিভাবে
কাপুনে জ্বর হয়, কেন হয়, তার চিকিৎসা ও প্রতিকার
আমাদের গ্রাম বাংলায় অনেক ছেলে মেয়েদের কাঁপুনি জ্বর হয় এবং তারা অনেক হতাশ
হয়ে যায়। কারণ গ্রামে তো এখন সেরকম ডাক্টর পাওয়া যায় না। তো তারা কিভাবে
ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা করবেঅ এই নিয়ে আজকের আলোচনা তো চলুন শুরু করা যাক।
কিভাবে কাপুনি জ্বর ঘরোয়া ভাবে চিকিৎসা করা যায়।
পোষ্ট সূচিপত্রঃকাঁপুনি জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা
- কাঁপুনির জন্য জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা
- কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসলে কি করতে হবে
- জ্বর হলে শরীর কাঁপা বন্ধ করার উপায়
- জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
- কাঁপুনি জ্বরের হলে ঘরোয়া ভাবে কি কি ঔষধ খাবো
- কোন রোগের জন্য কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে
- বাচ্চাদের কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসার কারণ কী
- বাচ্চাদের কাঁপুনি জ্বরের চিকিৎসা
- জ্বরের পর দুর্বলতা দূর করার উপায়
- কাঁপুনি জ্বরের জন্য ঘরোয়া প্রতিকার
- কাঁপুনি ও জ্বর কমাতে দাদির পুরনো ঘরোয়া টিপস
- উপসংহার
কাঁপুনির জ্বরের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা
কাঁপুনির জ্বরের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর সাধারণত শরীরের
তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে গেলে দেখা দেয়। যা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের
ফল হতে পারে। এমন অবস্থায় শরীরকে আরাম দিতে প্রথমেই পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া
জরুরি। গরম কাপড়ে শরীর ঢেকে রাখা এবং ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা উচিত।
হালকা গরম পানি দিয়ে শরীর মুছে দিলে তাপমাত্রা কমে আসে এবং কাঁপুনি কিছুটা কমে
যায়। এসময় শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করতে পর্যাপ্ত পানি। স্যুপ বা ফলের রস পান
করতে হবে। এতে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্ত থাকে ও জ্বর দ্রুত কমে।
ঘরোয়া চিকিৎসায় আদা ও তুলসী পাতার চা বেশ কার্যকর বলে মনে করা হয়। আদায়
থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান জ্বর ও কাঁপুনি কমাতে সাহায্য
করে। এক কাপ গরম পানিতে কিছুটা আদা কুচি ও তুলসী পাতা ফুটিয়ে চা তৈরি করে দিনে
দুই থেকে তিনবার খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়াও মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে গরম
পানি পান করাও দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এই পানীয়গুলো শরীরকে উষ্ণ
রাখে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
যদি কাঁপুনি ও জ্বর দুই দিনের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের
পরামর্শ নিতে হবে। তবে ঘরোয়া যত্নের পাশাপাশি হালকা ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
অত্যন্ত জরুরি। খিচুড়ি স্যুপ ফলমূল ও তরলজাত খাবার শরীরকে শক্তি দেয় এবং
দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে। ঠান্ডা পানীয়, আইসক্রিম বা ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে
চলা উচিত কারণ এগুলো কাঁপুনির মাত্রা বাড়াতে পারে। নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল
থাকা এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়াই কাঁপুনির জ্বর থেকে মুক্তির মূল
উপায়।
কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসলে কি করতে হবে
কাঁপুনি দিয়ে জ্বর সাধারণত ভাইরাসজনিত কারণে হয়ে থাকে। এসময় শরীর ঠান্ডা
অনুভব করে কিন্তু আসলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। প্রথমেই রোগীকে আরামদায়ক
ও উষ্ণ স্থানে বিশ্রাম দিতে হবে। অতিরিক্ত কাপড় না জড়িয়ে হালকা চাদর ব্যবহার
করা ভালো।যাতে শরীরের তাপমাত্রা ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও
ঘুম শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং দ্রুত আরোগ্য লাভে সাহায্য
করে।
জ্বর ও কাঁপুনি কমাতে শরীরে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা অত্যন্ত জরুরি। গরম
পানি, স্যুপ, ফলের রস বা ওরস্যালাইন পান করলে শরীরের পানিশূন্যতা পূরণ হয়।
তাছাড়াও হালকা গরম পানিতে ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিলে জ্বর কিছুটা কমে
আসে। আদা চা বা তুলসী পাতার পানি পান করাও প্রাকৃতিকভাবে শরীরকে উষ্ণ রাখে। এই
ঘরোয়া উপায়গুলো কাঁপুনি কমাতে ও জ্বর নিয়ন্ত্রণে আনতে কার্যকর ভূমিকা পালন
করে।
যদি জ্বর ২ দিনের বেশি স্থায়ী হয় বা মাথাব্যথা, বমি, শরীর ব্যথা, ঘাম
ইত্যাদি দেখা দেয়, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। চিকিৎসকের
নির্দেশনা ছাড়া ওষুধ সেবন করা উচিত নয়। রোগীর খাদ্যতালিকায় হালকা, পুষ্টিকর
খাবার রাখতে হবে যেমন খিচুড়ি, সবজি স্যুপ ও ফলমূল। নিয়মিত শরীরের তাপমাত্রা
পরীক্ষা করা এবং বিশ্রামে থাকা কাঁপুনির জ্বর থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে সহায়তা
করে।
জ্বর হলে শরীর কাঁপা বন্ধ করার উপায়
জ্বর হলে শরীর কাঁপা একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া কারণ শরীর তখন সংক্রমণের
বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তবে অতিরিক্ত কাঁপুনি হলে তা শরীরকে দুর্বল করে দিতে
পারে। কাঁপুনি কমাতে প্রথমে শরীরকে উষ্ণ রাখতে হবে। হালকা কম্বল ব্যবহার করা ও
ঘর গরম রাখা কার্যকর। গরম পানি বা স্যুপ পান করলে শরীরের তাপমাত্রা সমান থাকে
এবং কাঁপুনি কিছুটা কমে। সে সময় পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া অত্যন্ত জরুরি কারণ
ঘুম শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দ্রুত আরোগ্য লাভে সাহায্য করে।
শরীর কাঁপা বন্ধ করতে আদা চা, তুলসী পাতার রস বা মধু মেশানো গরম পানি পান করা
ঘরোয়া চিকিৎসায় দারুণ কার্যকর। এসব পানীয় শরীরকে ভেতর থেকে উষ্ণ রাখে এবং
সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। ঠান্ডা পানি, আইসক্রিম বা ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলা
উচিত। কারণ এগুলো কাঁপুনি বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া হালকা ব্যায়াম বা শরীর মুছে
গরম তোয়ালে ব্যবহার করলে রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে। জ্বর দীর্ঘস্থায়ী হলে
অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। যাতে দ্রুত ও নিরাপদে সুস্থ হওয়া
যায়।
কাঁপুনি জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
কাঁপুনি জ্বরের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা। জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
যা মূলত সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা। তবে অতিরিক্ত
জ্বর শরীরকে দুর্বল করে দিতে পারে। তাই কিছু ঘরোয়া উপায়ে তা কমানো সম্ভব।
প্রথমেই পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। কারণ বিশ্রাম শরীরকে পুনরুদ্ধারে
সাহায্য করে। হালকা গরম পানি দিয়ে শরীর মুছে দিলে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক
হতে শুরু করে। প্রচুর পানি, স্যুপ ও ফলের রস পান করলে পানিশূন্যতা রোধ হয় এবং
শরীর ঠান্ডা থাকে। এসব সহজ পদক্ষেপ জ্বর কমাতে ও শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে
কার্যকর ভূমিকা রাখে।
প্রাকৃতিক উপাদানও জ্বর কমাতে বিশেষভাবে সহায়ক। আদা চা, তুলসী পাতার রস বা
লেবু, মধু মেশানো গরম পানি শরীরকে উষ্ণ রাখে ও সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। এছাড়া
পেঁয়াজের রস বা আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে শরীর মুছে নেওয়া অনেক সময় ভালো ফল
দেয়। ঠান্ডা পরিবেশে না থাকা এবং হালকা কাপড় পরা শরীরের আরাম বাড়ায়। হালকা
ও পুষ্টিকর খাবার যেমন:- খিচুড়ি, স্যুপ বা ফলমূল খেলে শক্তি ফিরে আসে। সবশেষে
জ্বর বেশি দিন স্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত যাতে জটিলতা
এড়ানো যায়।
কাঁপুনি জ্বরের হলে ঘরোয়া ভাবে কি কি ঔষধ খাবো
কাঁপুনি জ্বর হলে প্রথমে শরীরের যত্ন নেওয়া এবং প্রাকৃতিক উপায়ে তাপমাত্রা
নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। ঘরোয়া কিছু উপাদান এই অবস্থায় দারুণ কাজ করে।
আদা চা জ্বর ও কাঁপুনি কমাতে খুব কার্যকর। কারণ এতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও
অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ রয়েছে। এক কাপ গরম পানিতে কিছু আদা কুচি ফুটিয়ে
দিনে দুইবার পান করলে জ্বরের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমে আসে। পাশাপাশি তুলসী
পাতার রস বা চা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে
সাহায্য করে। এই প্রাকৃতিক পানীয়গুলো কাঁপুনি কমাতে এবং শরীরকে উষ্ণ রাখতে
সহায়ক।
এছাড়া মধু ও লেবুর মিশ্রণ ঘরোয়া চিকিৎসায় বেশ জনপ্রিয় একটি উপায়। এক
গ্লাস গরম পানিতে এক চামচ মধু ও অল্প লেবুর রস মিশিয়ে দিনে দুইবার খেলে শরীরের
ক্লান্তি ও কাঁপুনি অনেকটা কমে। পুদিনা পাতা বা দারচিনি চা জ্বর জনিত শরীর
ব্যথা ও ঠান্ডা লাগা উপশমে সাহায্য করে। শরীরের পানি শূন্যতা রোধে ওরস্যালাইন
স্যুপ বা ফলের রস খাওয়া উচিত। এসব প্রাকৃতিক ঔষধ ও পানীয় শরীরের ভেতরের
ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। তবে জ্বর তিন দিনের বেশি স্থায়ী হলে অবশ্যই
চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
কোন রোগের জন্য কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে
কাঁপুনি দিয়ে জ্বর সাধারণত শরীরের সংক্রমণের একটি লক্ষণ যা নানা ধরনের রোগের
কারণে দেখা দিতে পারে। সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত
সংক্রমণ। যেমন সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া বা ইনফ্লুয়েঞ্জা। এ ছাড়াও টাইফয়েড,
ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গুর মতো রোগেও কাঁপুনি সহ জ্বর হতে পারে। এসব রোগে শরীরের
প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। যার ফলে শরীর
গরম অনুভব করে এবং কাঁপুনি দেখা দেয়। কাঁপুনির সাথে মাথাব্যথা, ঘাম, শরীর
ব্যথা বা দুর্বলতা দেখা দিলে তা উপেক্ষা করা উচিত নয়।
কাঁপুনি জ্বরের আরেকটি সাধারণ কারণ হলো ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশন বা রক্তে
সংক্রমণ। যাকে সেপসিস বলা হয়। এই ধরনের সংক্রমণে শরীর দ্রুত তাপমাত্রা
পরিবর্তন করে। ফলে হঠাৎ কাঁপুনি দেখা দেয়। কখনো কখনো ঠান্ডা লাগা শরীরের
ক্লান্তি, বা অতিরিক্ত কাজের চাপ থেকেও সাময়িক কাঁপুনি হতে পারে। তবে যদি
কাঁপুনি নিয়মিত আসে বা জ্বরের সাথে অন্য উপসর্গ যুক্ত হয়। তাহলে অবিলম্বে
চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক পরীক্ষা ও চিকিৎসার মাধ্যমে রোগ নির্ণয়
করলে দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব।
বাচ্চাদের কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসার কারণ কী
বাচ্চাদের কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসার পেছনে সাধারণত সংক্রমণ মূল কারণ হিসেবে কাজ
করে। ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে
তাপমাত্রা বাড়ায়। এতে শিশুর শরীর ঠান্ডা অনুভব করে এবং কাঁপুনি শুরু হয়। ছোট
বাচ্চাদের ইমিউন সিস্টেম প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় দুর্বল হওয়ায় তারা সহজে
সংক্রমণে আক্রান্ত হয়। সর্দি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা নিউমোনিয়ার মতো সাধারণ
রোগও জ্বরের কারণ হতে পারে। শরীরে এই ধরনের সংক্রমণ হলে শিশুর খিদে কমে যায়
এবং তারা অতিরিক্ত ক্লান্ত বোধ করে।
কিছু ক্ষেত্রে টাইফয়েড, ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়ার মতো জটিল সংক্রমণও শিশুর
কাঁপুনি সহ জ্বরের কারণ হয়। এই রোগগুলোতে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত পরিবর্তিত
হয় এবং শিশুর হঠাৎ কাঁপুনি শুরু হয়। এছাড়া দাঁতের সময়, অতিরিক্ত গরম বা
ঠান্ডা পরিবেশেও সাময়িক জ্বর দেখা দিতে পারে। শিশুর শরীর দ্রুত পানি হ্রাস
পায়, তাই পর্যাপ্ত তরল খাওয়ানো জরুরি। ঘরে সঠিক তাপমাত্রা ও আরামদায়ক পরিবেশ
বজায় রাখা কাঁপুনি কমাতে সহায়ক।
শিশুর কাঁপুনি জ্বর দীর্ঘস্থায়ী হলে অবহেলা করা উচিত নয়। কখনো কখনো ইউরিনারি
ট্র্যাক ইনফেকশন বা অন্যান্য ভীতিকর সংক্রমণও জ্বরের কারণ হতে পারে। শিশুর সাথে
মাথাব্যথা, বমি বা চুলকানি থাকলে বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। হালকা ও পুষ্টিকর খাবার,
পর্যাপ্ত পানি, বিশ্রাম এবং ডাক্তারি পরামর্শ শিশুর দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য
করে। প্রাথমিক সতর্কতা নিলে জ্বর ও কাঁপুনি থেকে শিশুকে দ্রুত আরাম দেওয়া
সম্ভব।
বাচ্চাদের কাঁপুনি জ্বরের চিকিৎসা
বাচ্চাদের কাঁপুনি জ্বর হলে প্রথম ধাপ হলো শিশুকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়া।
বিশ্রাম শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং দ্রুত সুস্থ হতে সহায়ক। ঘরের
তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা এবং শিশুকে অতিরিক্ত কাপড়ে মোড়ানো এড়ানো উচিত।
প্রয়োজনে হালকা কম্বল ব্যবহার করতে পারেন, যাতে শরীর খুব ঠান্ডা বা গরম না
হয়। শিশু ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় পানি বা স্যুপ পান করানো উচিত। এভাবে শিশুর
শরীরের পানি ক্ষতি প্রতিরোধ হয়। এই প্রাথমিক যত্ন জ্বর ও কাঁপুনি কমাতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
শিশুর জ্বর কমানোর জন্য প্রাকৃতিক উপায়ও কার্যকর। আদা চা, তুলসী পাতার রস বা
লেবু-মধু মিশ্রিত গরম পানি শরীরকে উষ্ণ রাখে। এছাড়া হালকা পুষ্টিকর খাবার
যেমন খিচুড়ি, স্যুপ বা ফলমূল খাওয়ানো উচিত। কখনো কখনো শিশুর তাপমাত্রা
নিয়ন্ত্রণে পারাসিটামল জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যায়, তবে শুধুমাত্র
ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী। ঠান্ডা পানীয় বা আইসক্রিম এড়ানো জরুরি, কারণ
এগুলো শরীরের তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি করতে পারে। ঘরোয়া যত্নের পাশাপাশি শিশুর
তাপমাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করা আবশ্যক।
যদি জ্বর দুই দিন বা তার বেশি স্থায়ী হয় বা শিশুর সাথে মাথাব্যথা, বমি,
তন্দ্রাহীনতা বা অসুস্থতার অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়, তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের
পরামর্শ নেওয়া উচিত। ডাক্তার শিশুর রোগের প্রকৃতি নির্ণয় করে উপযুক্ত ওষুধ বা
থেরাপি দিতে পারবেন। ঘরোয়া যত্ন ও পুষ্টিকর খাদ্যশক্তি শিশুর শরীরকে দ্রুত
পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে। নিয়মিত নজরদারি এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত
করলে শিশুর কাঁপুনি জ্বর দ্রুত কমে আসে এবং সুস্থতা ফিরে আসে।
জ্বরের পর দুর্বলতা দূর করার উপায়
জ্বর কাটানোর পর শরীর প্রায়ই দুর্বল অনুভব করে কারণ সংক্রমণ এবং উচ্চ
তাপমাত্রা শরীরের শক্তি কমিয়ে দেয়। এই দুর্বলতা দূর করতে প্রথমে পর্যাপ্ত
বিশ্রাম নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম শরীরের পুনর্নবীকরণ প্রক্রিয়াকে সক্রিয়
রাখে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা পুনরায় বাড়ায়। এছাড়া হালকা ব্যায়াম ধীরে ধীরে
শুরু করলে রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে এবং শক্তি বৃদ্ধি পায়। ঘরে আরামদায়ক পরিবেশ
এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণও শরীরকে দ্রুত পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত
পানি পান করাও শরীরের ক্ষতিপূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
পুষ্টিকর খাদ্য শক্তি পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। খিচুড়ি, স্যুপ,
সবজি ও ফলমূল শরীরকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে। প্রোটিনযুক্ত
খাবার যেমন ডাল, দুধ বা ডিমও মাংসপেশি শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক। হালকা ও ছোট
খাবারের আকারে দিনে কয়েকবার খাওয়ানো ভালো যাতে শরীর সহজে হজম করতে পারে। গরম
চা বা গরম পানীয় শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। খাবার ও
পানীয়ের সঠিক সমন্বয় শরীরকে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনে।
মনোভাব এবং মানসিক শান্তিও দুর্বলতা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ। পছন্দের হালকা
কার্যকলাপে ব্যস্ত থাকা যেমন বই পড়া, হালকা হাঁটা বা প্রিয় গান শোনা শরীরকে
চাঙ্গা রাখে। ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট বা প্রোবায়োটিক খাদ্যও শক্তি বৃদ্ধি ও
পাচনতন্ত্র সচল রাখতে সহায়ক। দীর্ঘসময় কঠোর কাজ এড়ানো এবং ধীরে ধীরে
দৈনন্দিন রুটিনে ফিরলে শরীর দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় আসে। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ
এবং ধৈর্য সহকারে যত্ন নিলে জ্বরের পর দুর্বলতা দ্রুত কমে।
কাঁপুনি জ্বরের জন্য ঘরোয়া প্রতিকার
কাঁপুনি জ্বর হলে শরীরকে আরাম দেওয়া প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত। পর্যাপ্ত
বিশ্রাম এবং আরামদায়ক পরিবেশ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ঘরের
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখা এবং অতিরিক্ত কাপড়ে মোড়ানো এড়ানো জরুরি। গরম
পানি দিয়ে শরীর মুছে দেওয়া কাঁপুনি কমাতে সাহায্য করে। প্রচুর পানি ফলের রস
বা হালকা স্যুপ পান করলে শরীরের পানিশূন্যতা পূরণ হয়। এসব প্রাথমিক যত্ন
শরীরকে শক্তিশালী রাখে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই সহজ করে।
প্রাকৃতিক উপায়েও কাঁপুনি কমানো যায়। আদা চা, তুলসী পাতার রস বা লেবু মধু
মিশ্রিত গরম পানি শরীরকে উষ্ণ রাখে। পুদিনা বা দালচিনি চা শরীরের তাপমাত্রা
নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ক্লান্তি কমায়। হালকা পুষ্টিকর খাবার যেমন খিচুড়ি, সবজি
স্যুপ বা ফলমূল খাওয়া উচিত। ঠান্ডা পানীয় বা আইসক্রিম এড়ানো দরকার। কারণ
এগুলো কাঁপুনি বাড়াতে পারে। নিয়মিত শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা উচিত। যাতে
প্রয়োজনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
যদি কাঁপুনি জ্বর দুই দিনের বেশি স্থায়ী হয় বা সঙ্গে মাথাব্যথা। বমি বা
অসুস্থতার অন্যান্য লক্ষণ থাকে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। ডাক্তার
শিশুর বা রোগীর রোগের প্রকৃতি নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে পারবেন। ঘরোয়া
যত্ন ও পুষ্টিকর খাদ্য শরীরকে দ্রুত পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত পানি।
বিশ্রাম এবং প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক প্রতিকার নিয়মিত ব্যবহার করলে কাঁপুনি জ্বর
দ্রুত কমে। এসব পদক্ষেপে শরীর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে এবং রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
কাঁপুনি ও জ্বর কমাতে দাদির পুরনো ঘরোয়া টিপস
দাদির পুরনো ঘরোয়া টিপস কাঁপুনি ও জ্বর কমাতে অনেক সময় কার্যকর প্রমাণিত
হয়েছে। প্রথমেই ঘরে আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। অতিরিক্ত কাপড়ে
মোড়ানো বা খুব ঠান্ডা জায়গায় থাকা এড়ানো উচিত। গরম পানি দিয়ে শরীর মুছে
দিলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রচুর পানি ও গরম স্যুপ বা ফলের রস
পান করলে শরীরের পানি ও পুষ্টি বজায় থাকে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলে শরীরের
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এই সহজ ঘরোয়া যত্ন কাঁপুনি কমাতে
প্রাথমিকভাবে সাহায্য করে।
আদা চা বা তুলসী পাতার রস দাদির ঘরোয়া প্রতিকারে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
গরম পানিতে আদা কুচি ফুটিয়ে চা বানানো শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং সংক্রমণের
বিরুদ্ধে লড়াই বাড়ায়। তুলসী পাতার রস শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী
করে। লেবু ও মধু মিশ্রিত গরম পানি শরীরকে আরাম দেয় এবং ক্লান্তি কমায়। এই
প্রাকৃতিক উপায়গুলো জ্বর কমাতে নিরাপদ এবং প্রায়শই ব্যবহৃত হয়।
দাদির ঘরোয়া টিপস অনুযায়ী পুদিনা পাতা বা দারচিনি চা শরীরের তাপমাত্রা
নিয়ন্ত্রণে রাখে। হালকা ও পুষ্টিকর খাবার যেমন খিচুড়ি, স্যুপ বা সবজি শরীরকে
শক্তি দেয়। ঠান্ডা পানীয় বা আইসক্রিম এড়ানো উচিত, কারণ এগুলো কাঁপুনি
বাড়াতে পারে। নিয়মিত শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম রাখা
দ্রুত সুস্থ হতে সহায়ক। প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই ঘরোয়া
প্রতিকারগুলো সমন্বয় করলে কাঁপুনি ও জ্বর দ্রুত কমে এবং শরীর স্বাভাবিক
অবস্থায় ফিরে আসে।
উপসংহার
কাঁপুনি জ্বরের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা উপরে সবকিছু বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে।তো
আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়লে আশা করি সবকিছু বুঝতে পারবেন। আর এখনো যদি আপনারা
মনোযোগ সহকারে না পড়ে থাকেন তাহলে আপনি আগে মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি
পড়ে নেন না হলে কিছু বুঝতে পারবেন না। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বা আপনার কোন
কিছু মতামত দেওয়ার থাকলে কমেন্ট করুন। এবং আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
আপনি নিবোর্ন সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url