জন্ডিসের লক্ষণ ও প্রতিকার
জন্ডিসের লক্ষণ ও প্রতিকার নিয়ে আজকে এই আর্টিকেলটি। আজকের আর্টিকেলে
আপনারা জানতে পারবেন জন্ডিস কি কিভাবে হয় এবং এর লক্ষণ কি কিভাবে প্রতিকার
করবেন কিভাবে নির্ণয় করা যায়। জন্ডিস হলে কেন ত্বক হলুদ হয় জন্ডিস হলে কি
করনীয় কি এর ঘরোয়া চিকিৎসা কি এবং জন্ডিসের সতর্কতা নিয়ে আজকের এই
আর্টিকেলটি
জন্ডিস খুব সাধারণ রোগ মনে হলেও বিষয়টা কিন্তু সবসময় সাধারণ থাকে না।
জন্ডিস মারাত্মক রোগীর কারণ হয়ে উঠতে পারে। তো চলুন শুরু করা যাক আজকের
আর্টিকেলটি
পোষ্ট সূচিপত্রঃজন্ডিসের লক্ষণ ও প্রতিকার
জন্ডিসের লক্ষণ ও প্রতিকার
জন্ডিসের লক্ষণ ও প্রতিকার। আমাদের কম বেশি সবারই কোনো না কোনো এক সময় জন্ডিস
হয়েছিল। তো আজকে আমরা জানবো জন্ডিসের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে। চোখ ও ত্বক
হলুদ হয়ে যাওয়া জন্ডিসকে চেনার সবচেয়ে সহজ উপায়। এর পাশাপাশি আবার প্রসাবের
রং গার হয়ে যায় বা মলের রং ফ্যাকসা হয়ে যায়। জন্ডিস যার হয় সে সাধারণত
দুর্বলতা বা মাথাব্যথা বা জড় অনুভব করে। আবার অনেক ক্ষেত্রেই বমি ভাব দেখা
যায়। আরো অনেক আছে যেমন পেট ফাঁপা ভাব বা ব্যথা হতে পারে বিশেষ করে লিভারের
ডান পাশে নিচে আরো ইত্যাদি।
জন্ডিসের প্রতিকার জন্ডিস হলে আমাদেরকে প্রথমত বিশ্রাম নিতে হবে এবং সঠিক
সময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। সেই ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন
করতে হবে এবং পানি ও তরল জাতীয় খাবার বেশি বেশি করে খাওয়া লাগবে। যেমন ফলের
রস, ডাবের পানি ইত্যাদি। যাদের জন্ডিস আছে তারা ভাজাপোড়া মসলাযুক্ত খাবার থেকে
বিরত থাকুন। জন্ডিস হলে লিভারের কার্যক্ষমতা স্বাভাবিক রাখতে ধূমপান ও
অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকতে হবে। এর পাশাপাশি আবার ঘরোয়া যত্ন নেওয়া লাগবে।
আবার সঠিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জরুরী সচেতনা ও সময়মতো চিকিৎসায় জন্ডিস
প্রতিরোধের মূল উপায়।
জন্ডিস কি এবং কেনো হয়
আমাদের মাঝে এখনো অনেকেই আছে যারা জন্ডিস কি জানে না। তো তাদের জন্য বলি
জন্ডিস বা কামলা একটি সাধারন কিন্তু গুরুতর। যা শরীরের বিলিরুবিন নামক
পদার্থের অতিরিক্ত উপস্থিতির কারণে দেখা যায়। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে
পারে বিলিরুবিন আবার কি বিলিরুবিন হলো রক্তের লোহিত কণিকা ভাঙার পর
তৈরি হয় এবং তা আমাদের লিভারের মাধ্যমে শরীরের থেকে নির্গত হয়। যখন আমাদের
লিভার দুর্বল হয়ে যায় বা কার্যক্ষমতা কমে যায় তখনই এই পদার্থ রক্তে জমে
গিয়ে ত্বক বা চোখ হলুদ করে দেয়। জন্ডিস কোন নির্দিষ্ট রোগ নয় এটি হলো লিভার
সংকৃত সমস্যার একটি লক্ষণ তাই এটি দেখা দিলে আমাদের উচিত দ্রুত ডক্টরের পরামর্শ
নেওয়া।
আমাদের জন্ডিস কেন হয় বা এর প্রধান কারণ গুলো কি। সাধারণত তিন ধরনের বা কারণে
হতে পারে। যেমন লিভারের সমস্যা বা লিভারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা অথবা লিভারের
পরবর্তী সমস্যা ইত্যাদি। ভাইরাস জনিত হেপাটাইটিস এবং অতিরক্ত মধ্যবাণ অথবা
সংক্রমণ ওষুধের পার্শপ্রতিক্রিয়া বা পিত্তনালীর বাধা এ রোগের মূল কারণ গুলোর
মধ্যে পড়ে। আবার ভেঙে গেলে জন্ডিস হতে পারে তাই নবজাতকের ক্ষেত্রেও এটি দেখা
যায়। কারণ তাদের লিভার সম্পূর্ণ বিকাশিত থাকে না। আবার সবার ক্ষেত্রেই মূল
কারণ চিহ্নিত করে চিকিৎসা নাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের শরীরে জন্ডিসের কোন
প্রভাব পড়লে সাথে সাথে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নেওয়া উচিত।
জন্ডিস কত প্রকার ও কি কি
জন্ডিস বা কামলা একটি সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক সমস্যা। যা মূলত
রক্তে বিলিরুবিন নামক পদার্থের পরিমাণ বেড়ে গেলে ঘটে। এর ফলে ত্বক, চোখ ও
মিউকাস ঝিল্লি হলুদ হয়ে যায়। জন্ডিস সাধারণত তিন প্রকারের হয়ে থাকে।
প্রি-হেপাটিক, হেপাটিক ও পোস্ট-হেপাটিক জন্ডিস। প্রতিটি প্রকারের কারণ ও লক্ষণ
কিছুটা আলাদা হলেও মূল সমস্যা লিভারের কার্যক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত। এই রোগ
শিশু থেকে বয়স্ক সব বয়সের মানুষকেই প্রভাবিত করতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে
এটি জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
প্রি হেপাটিক জন্ডিস সাধারণত তখন হয় যখন রক্তে অতিরিক্ত পরিমাণ লোহিত
রক্তকণিকা ভেঙে যায় এবং অতিরিক্ত বিলিরুবিন তৈরি হয়। হেপাটিক জন্ডিসের মূল কারণ
হলো লিভারের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, যা হেপাটাইটিস ভাইরাস বা অ্যালকোহলের কারণে
হতে পারে। আর পোস্ট হেপাটিক জন্ডিস ঘটে যখন পিত্তনালী বন্ধ হয়ে যায়, ফলে
বিলিরুবিন শরীর থেকে বের হতে পারে না। এসব ক্ষেত্রে চোখ ও ত্বক হলুদ হয়ে যায়,
প্রস্রাব গাঢ় রঙের হয় এবং মল হালকা রঙ ধারণ করে।
জন্ডিসের ধরন নির্ণয়ের জন্য রক্ত পরীক্ষা, লিভার ফাংশন টেস্ট এবং
আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হয়ে থাকে। প্রতিটি ধরনের চিকিৎসা আলাদা, যেমন
প্রি-হেপাটিক জন্ডিসে রক্তের ভারসাম্য রক্ষা করা জরুরি, হেপাটিক জন্ডিসে লিভার
পুনরুদ্ধারের চিকিৎসা করা হয়, আর পোস্ট-হেপাটিক জন্ডিসে বাধা দূর করা হয়।
নিয়মিত বিশুদ্ধ পানি পান, সুষম খাদ্য গ্রহণ ও অ্যালকোহল পরিহার এই রোগ থেকে
রক্ষা পেতে সাহায্য করে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে জন্ডিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে
আনা সম্ভব।
জন্ডিস হলে বুঝার উপায়
জন্ডিস হলে বুঝার উপায় কি জন্ডিসরের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো ত্বক ও চোখের
সাদা অংশ হলুদ হয়ে যাওয়া। এটি ঘটে যখন শরীরে অতিরিক্ত বিলিরুবিন জমে যায় যা
লিভারের কারণে ক্ষমতা কমে দেয়। এবং জন্ডিসে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রস্রাবের রং
গাঢ় হয়ে যায় এবং মলের রং ফ্যাকাসে বা সাদা হয়ে যেতে পারে অনেক সময় আক্রান্ত
রোগীর চুলকানি দুর্বলতা ও খাবারের অরুচি দেখার যায়। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের
সব সময় ক্লান্তি লেগে থাকে। এছাড়া চোখের ঝাপসা দেখে মাথা ব্যাথা হয় আবার
মাথা ঘোরা অনুভব করা। জার্নিচার লক্ষণ হতে পারে এসব পরিবর্তন দেখা দিলে দ্রুত
চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
জন্ডিস বোঝার জন্য শুধু বাহ্যিক লক্ষণ নয় কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষারও প্রয়োজন হয়।
রক্ত পরীক্ষা করে মাত্রা মাপা হয় বা জন্ডিসের উপস্থিতি নিশ্চিত করেন। এছাড়াও
লিভারের ফ্যান ফাংশন টেস্ট আলট্রাসনোগ্রাফি বা সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে লিভারের
অবস্থা নির্ণয় করা যায়। রোগী যদি অতিরিক্ত ক্লান্তি তোকে চুলকানি ও পেটে
ব্যথা অনুভব করে হতে পারে। তবে এটি সত্য কথা সংকেত হতে পারে নিজের শরীরের
পরিবর্তন গুলো খেয়াল রাখা গুরুত্বপূর্ণ সময় মত চিকিৎসা শুরু করলে
জন্ডিস ম্পন্নভাবে নিরাময় করা সম্ভব এবং লিভার সুস্থ রাখা সম্ভব তাই আমাদের
জন্ডিসের সংকেত পাওয়া মাত্রই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
কোন রোগের কারণে জন্ডিস হয়
কোন রোগের কারণে জন্ডিস হয়। জন্ডিস মূলত এমন কিছু রোগের কারণে হয়ে থাকে।
যেগুলো লিভারের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত করে। সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো হেপাটাইটিস,
যা ভাইরাসজনিত একধরনের লিভার ইনফেকশন। হেপাটাইটিস ভাইরাস লিভারের কোষ
নষ্ট করে দেয়। ফলে বিলিরুবিন জমে শরীরে জন্ডিস দেখা দেয়। এছাড়া সিরোসিস নামক
দীর্ঘমেয়াদি লিভার রোগেও জন্ডিস হতে পারে। অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান, ফ্যাটি
লিভার, বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেও এ সমস্যা দেখা দেয়। এসব ক্ষেত্রে
ত্বক ও চোখের হলুদাভ ভাব, ক্ষুধামন্দা এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়া সাধারণ লক্ষণ
হিসেবে দেখা যায়।
কিছু ক্ষেত্রে জন্ডিসের কারণ সরাসরি লিভার নয়, বরং পিত্তনালীর বাধা। যেমন
গলস্টোন বা প্যানক্রিয়াসের টিউমার পিত্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করলে বিলিরুবিন
শরীরে জমে যায়। এছাড়া হিমোলাইটিক অ্যানিমিয়া রোগেও রক্তের লোহিত কণিকা দ্রুত
ভেঙে গিয়ে অতিরিক্ত বিলিরুবিন তৈরি হয়। যা জন্ডিস সৃষ্টি করে। শিশুর ক্ষেত্রে
জন্মগত লিভার সমস্যাও কারণ হতে পারে। এসব রোগ সময়মতো শনাক্ত ও চিকিৎসা না করলে
জন্ডিস জটিল আকার নিতে পারে। তাই জন্ডিস দেখা দিলে বিলম্ব না করে চিকিৎসকের
পরামর্শ নেওয়া সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
জন্ডিস কিভাবে নির্ণয় করতে হয়?
জন্ডিস নির্ণয়ের প্রথম ধাপ হলো রোগীর বাহ্যিক লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করা। সাধারণত
চোখের সাদা অংশ ও ত্বক হলুদ হয়ে গেলে এটি জন্ডিসের প্রধান ইঙ্গিত দেয়। পাশাপাশি
চিকিৎসক রোগীর শারীরিক ইতিহাস খাদ্যাভ্যাস ও ওষুধ গ্রহণের তথ্য নেন। এরপর রক্ত
পরীক্ষা করে বিলিরুবিনের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। যা জন্ডিস নির্ণয়ে সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ স্বাভাবিক সীমা অতিক্রম করলে
জন্ডিস নিশ্চিত ধরা হয়। এছাড়া রোগীর প্রস্রাব ও মলের রঙও পর্যবেক্ষণ করা হয়,
কারণ এগুলোও লিভারের কার্যক্ষমতা বোঝাতে সাহায্য করে।
প্রাথমিক পরীক্ষার পর চিকিৎসক আরও কিছু বিশেষ পরীক্ষা নির্ধারণ করতে পারেন।
যেমন লিভার ফাংশন টেস্ট, যা লিভারের এনজাইমের মাত্রা নির্ণয় করে।
আল্ট্রাসনোগ্রাফি বা সিটি স্ক্যান করে দেখা হয় পিত্তনালী বা লিভারে কোনো বাধা
বা ক্ষতি আছে কি না। কিছু ক্ষেত্রে হেপাটাইটিস ভাইরাস টেস্ট করাও জরুরি হয়ে
পড়ে। কারণ ভাইরাসজনিত সংক্রমণ জন্ডিসের একটি সাধারণ কারণ। এই পরীক্ষাগুলোর
ফলাফল একত্রে বিশ্লেষণ করেই চিকিৎসক নিশ্চিত হন জন্ডিসের ধরন ও কারণ সম্পর্কে।
সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারলেই কার্যকর চিকিৎসা দেওয়া।
ত্বক হলুদ হওয়ার কারণ কি
ত্বক হলুদ হওয়ার কারন কি ।ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া সাধারণত শরীরে বিলিরুবিন নামক
পদার্থের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে ঘটে।বিলিরুবিন হলো একধরনের হলুদ রঞ্জক যা
লোহিত রক্তকণিকা ভেঙে গেলে তৈরি হয়।স্বাভাবিক অবস্থায় লিভার এই বিলিরুবিন
প্রক্রিয়াজাত করে শরীর থেকে বের করে দেয়। কিন্তু যখন লিভার ঠিকভাবে কাজ করতে
পারে না বা পিত্তনালী বন্ধ হয়ে যায়। তখন বিলিরুবিন রক্তে জমে যায়। এর ফলেই ত্বক
চোখ এবং নখে হলুদাভ ভাব দেখা দেয়। এই অবস্থা সাধারণত জন্ডিসের অন্যতম লক্ষণ
হিসেবে বিবেচিত হয়।
ত্বক হলুদ হওয়ার অন্যতম কারণ হলো হেপাটাইটিস, যা ভাইরাস সংক্রমণের মাধ্যমে
লিভারের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত করে। এছাড়া সিরোসিস, ফ্যাটি লিভার, বা অতিরিক্ত
অ্যালকোহল গ্রহণেও লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। এমনকি কিছু ওষুধের
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়ও লিভারে চাপ পড়ে, ফলে বিলিরুবিন শরীরে জমে ত্বক হলুদ হয়ে
যায়। কিছু ক্ষেত্রে গলস্টোন বা পিত্তনালীর বাধা বিলিরুবিন নির্গমন বাধাগ্রস্ত
করে। যা এই হলুদভাব সৃষ্টি করে। তাই ত্বকের রঙে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিলে
তা অবহেলা করা উচিত নয়।
ত্বক হলুদ হওয়ার কারণ সবসময় লিভারজনিত নাও হতে পারে। কখনও কখনও
ক্যারোটিনেমিয়া নামক অবস্থাতেও এটি দেখা যায়। অতিরিক্ত গাজর, কুমড়া, বা
পেঁপের মতো বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীরে ক্যারোটিন জমে ত্বক
সাময়িকভাবে হলুদ হয়ে যেতে পারে। তবে এতে চোখের সাদা অংশ সাধারণত হলুদ হয় না।
যা জন্ডিস থেকে এটি আলাদা করে চেনা যায়। সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য রক্ত
পরীক্ষা ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। কারণ ত্বক হলুদ হওয়া শরীরের
অভ্যন্তরীণ অসুস্থতার একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হতে পারে।
জন্ডিস হলে কিভাবে প্রতিকার করবো
জন্ডিস হলে প্রথমেই জানতে হবে এর মূল কারণ কী? কারণ প্রতিকার নির্ভর করে সেই
কারণের ওপর। যদি ভাইরাসজনিত হেপাটাইটিসের কারণে জন্ডিস হয়। তাহলে পর্যাপ্ত
বিশ্রাম নেওয়া এবং লিভারের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে এমন খাবার পরিহার করা
জরুরি। চর্বিযুক্ত, ভাজা, পোড়া ও ঝাল খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। এর পরিবর্তে হালকা
সেদ্ধ খাবার, ফলমূল ও তরলজাতীয় খাবার খেতে হবে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে
বিশুদ্ধ পানি পান শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করতে সাহায্য করে। অ্যালকোহল ও
ধূমপান সম্পূর্ণভাবে বর্জন করতে হবে ।কারণ এগুলো লিভারের ক্ষতি আরও বাড়িয়ে
দেয়।
জন্ডিস প্রতিকারের অন্যতম উপায় হলো চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন ও নিয়মিত
পর্যবেক্ষণ। যদি পিত্তনালী বন্ধ হয়ে জন্ডিস হয়। তাহলে চিকিৎসা হিসেবে
অস্ত্রোপচার বা বিশেষ থেরাপির প্রয়োজন হতে পারে। প্রাকৃতিক উপায়ে প্রতিকার
চাইলে লেবুর রস, মধু, নারকেলের পানি ও পেঁপের পাতার রস উপকারী হতে পারে, তবে
এগুলো চিকিৎসকের পরামর্শে গ্রহণ করা শ্রেয়। লিভার সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম,
মানসিক চাপ কমানো ও নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করা দরকার। সময়মতো চিকিৎসা ও
জীবনধারায় পরিবর্তন আনলে জন্ডিস সম্পূর্ণভাবে নিরাময় সম্ভব হয়।
জন্ডিসের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা
জন্ডিসের প্রাথমিক পর্যায়ে ঘরোয়া চিকিৎসা অনেক সময় উপকারী ভূমিকা রাখতে পারে,
তবে এটি কখনই চিকিৎসকের বিকল্প নয়। জন্ডিস হলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের
করে দিতে পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস
পানি পান শরীরের ডিটক্স প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। এছাড়া তাজা ফল যেমন পেঁপে,
আপেল, কমলা ও কলা খাওয়া লিভারের কার্যক্ষমতা উন্নত করে। লেবু ও মধুর মিশ্রণ
সকালবেলা খালি পেটে খেলে লিভার পরিশুদ্ধ হতে সাহায্য করে। এসব প্রাকৃতিক উপাদান
শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও কার্যকর ভূমিকা রাখে।
নারকেলের পানি জন্ডিসের সময় একটি আদর্শ পানীয়, যা শরীরকে ঠান্ডা রাখে ও হারানো
খনিজ পদার্থ পূরণ করে। এছাড়া আদা ও তুলসী পাতার রসও লিভারের প্রদাহ কমাতে
সহায়ক। এক কাপ গরম পানিতে সামান্য আদার রস ও মধু মিশিয়ে দিনে দুইবার খেলে
হজমশক্তি ভালো থাকে এবং বিলিরুবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। চর্বিযুক্ত
খাবার, অ্যালকোহল ও জাঙ্ক ফুড সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলা উচিত। শরীর বিশ্রাম দিন
এবং হালকা, সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ করুন। নিয়ম মেনে ঘরোয়া এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ
করলে দ্রুত সুস্থতা ফিরে পাওয়া সম্ভব।
জন্ডিসের জন্য সতর্কতা
জন্ডিস হলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জীবনধারায় সচেতন পরিবর্তন আনা।
প্রথমেই চর্বিযুক্ত, ভাজা-পোড়া এবং ঝাল খাবার পরিহার করতে হবে। কারণ এসব খাবার
লিভারের ওপর অতিরিক্ত চাপ ফেলে। অ্যালকোহল ও ধূমপান সম্পূর্ণভাবে বর্জন করা
জরুরি, কারণ এগুলো লিভারের কোষ দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত করে। পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি
পান শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করতে সহায়তা করে। দৈনন্দিন খাবারে বেশি করে
ফলমূল, শাকসবজি ও তরল খাবার রাখতে হবে। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক প্রশান্তি
বজায় রাখা লিভারের পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে। নিয়মিত হালকা ব্যায়ামও শরীরের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
জন্ডিসের সময় যেকোনো ওষুধ নিজে থেকে সেবন করা বিপজ্জনক হতে পারে। তাই
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ গ্রহণ করা উচিত নয়। যদি জ্বর, পেট ব্যথা বা
অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব হয়, তবে অবিলম্বে চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। অন্যের
ব্যবহৃত খাবার, পানি বা সিরিঞ্জ ব্যবহার থেকেও বিরত থাকতে হবে, কারণ ভাইরাসজনিত
জন্ডিস সংক্রমণ ঘটাতে পারে। বাইরে খাওয়া কমিয়ে ঘরে রান্না করা স্বাস্থ্যকর
খাবার খাওয়া উচিত। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং লিভার ফাংশন টেস্ট করালে রোগের
ঝুঁকি আগেই চিহ্নিত করা যায়। সচেতনতা ও সঠিক জীবনধারা জন্ডিস প্রতিরোধে সবচেয়ে
কার্যকর ভূমিকা রাখে।
জন্ডিসের লক্ষণ ও প্রতিকার / শেষ কথা
জন্ডিসের লক্ষণ ও প্রতিকার কারণ চিকিৎসা ইত্যাদি নিয়ে উপরে আমরা আলোচনা
করেছি। তো আর্টিকেলটি যদি আপনি মন দিয়ে ভালোমতো পড়ে থাকেন তাহলে সবকিছুই
বুঝতে পারবেন। কিভাবে জন্ডিস হলে বুঝা যাবে আবার জন্ডিস কি, কেন হয় ,কোন রোগের
কারণে জন্ডিস হয়, কিভাবে জন্ডিস নির্ণয় করবেন ইত্যাদি তো আর্টিকেলটি পড়ে যদি
আপনাকে ভালো লাগে বা আপনার কিছু মতামত দেওয়ার থাকে তাহলে একটি কমেন্ট করুন এবং
আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এবং প্রতিদিন এরকম আর্টিকেল পেতে আমার পেজটি
ফলো করুন।
এতক্ষণ মন দিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি নিবোর্ন সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url